ইলেক্টোরাল কলেজ কী এবং তা কীভাবে কাজ করে?
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে লয়ে দেশটির মানুষের মধ্যে সব সময়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হয়ে একটি নির্বাচকমণ্ডলীর (ইলেক্টোরাল কলেজ) সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি অনেকের কাছেই অবাক করা। আমেরিকান রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত বিষয় হলো এই ইলেক্টোরাল কলেজ। এই নিবন্ধে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো এই ইলেক্টোরাল কলেজ সম্পর্কে। এই নিবন্ধটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন ইলেক্টোরাল কলেজ কী, এটি কীভাবে কাজ করে, এর সদস্যদের নির্বাচন প্রক্রিয়া, এই নির্বাচকমন্ডলীর ইতিহাস, এর সমালোচনা এবং এটির পক্ষে যুক্তিসমূহ।
ইলেক্টোরাল কলেজ কী?
ইলেক্টোরাল কলেজ হলো একটি সংস্থা যাদের কাজ হলো মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা। এটি প্রতি চার বছর অনুষ্ঠিত হয়, যখন আমরা রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য ভোট দিই। আমরা যখন এই প্রার্থীদের জন্য ভোট দিই, তখন আমরা আসলে নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যদের জন্য ভোট দিই। প্রতিটি রাজ্যে নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যদের সংখ্যা সেই রাজ্যের কংগ্রেস সদস্য ও সিনেটরদের সংখ্যার সমান। নিউইয়র্কের মতো বড় রাজ্যের সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে, আর ওয়াইওমিংয়ের মতো ছোট রাজ্যের সবচেয়ে কম ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে।
যখন আমরা প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য ভোট দিই, তখন আমরা আসলে সেই রাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্যদের জন্য ভোট দিই। প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরা তাদের রাজ্যে জনপ্রিয় ভোটের বিজয়ীর জন্য ভোট দিতে বাধ্য থাকে। যে প্রার্থী সর্বাধিক ইলেক্টোরাল ভোট পায় তিনিই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
ইলেক্টোরাল কলেজ কাজের প্রক্রিয়া
মূলত ইলেক্টোরাল কলেজ একটি অপ্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি সরাসরি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত না হওয়া একটি সংস্থা, বরং দেশের প্রতিটি রাজ্য দ্বারা নির্বাচিত নির্বাচকদের একটি গ্রুপ নিয়ে গঠিত। নির্বাচনী কলেজের সদস্যের সংখ্যা প্রতিটি রাজ্যের কংগ্রেসের সদস্য এবং সিনেটরদের সংখ্যার সমান। মোট নির্বাচকদের সংখ্যা বর্তমানে 538 জন।
ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্য নির্বাচন
আমি সংযুক্ত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক এবং আমি সুযোগ পেয়েছি আমাদের ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম সম্পর্কে জানার। ইলেক্টোরাল কলেজ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে। এটি প্রতিটি রাজ্যের দ্বারা নির্বাচিত ভোটদাতাদের একটি গ্রুপ। ভোটদাতারা সেই প্রার্থীকে ভোট দেয় যাদের তারা মনে করেন তাদের রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত।
প্রতিটি রাজ্যের ভোটদাতাদের সংখ্যা তার জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে বেশি ভোটদাতা থাকে, এবং কম জনবহুল রাজ্যগুলিতে কম ভোটদাতা থাকে। কেবলমাত্র ডিস্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়ায় কংগ্রেসের ভোটাধিকার নেই, যেখানে কেবল তিনটি ভোট রয়েছে।
ভোটদাতাদের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রতিটি রাজ্যে ভোট দেওয়া প্রয়োজন। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রাজ্যের ভোটদাতাদের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়। যে প্রার্থী রাজ্যের ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা জেতে সে রাজ্যের সকল ভোট পায়।
একবার প্রতিটি রাজ্যের ভোটদাতাদের নির্বাচন করা হলে, তারা ডিসেম্বরের প্রথম সোমবারের পরে দ্বিতীয় বুধবারে মিলিত হয়। ভোটদাতারা সেই প্রার্থীকে ভোট দেয় যাদের তারা মনে করেন তাদের রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত। যে প্রার্থী প্রতিটি রাজ্যের ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা জেতে সেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়।
ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম একটি বিতর্কিত বিষয়। কিছু লোক মনে করে যে এটি একটি অন্যায্য সিস্টেম যা জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে না। অন্যরা মনে করেন যে এটি একটি প্রয়োজনীয় সিস্টেম যা ছোট রাজ্যগুলিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেয়। ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম একটি জটিল বিষয় এবং এটি বোঝার জন্য সময় ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
ইলেক্টোরাল কলেজের ইতিহাস
আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ইলেক্টোরাল কলেজ। এটি আমাদেরকে আমাদের রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করার অনুমতি দেয়, যিনি আমাদের দেশের প্রধান নির্বাহী এবং সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফ।
ইলেক্টোরাল কলেজের সমালোচনা
মূলত ইলেক্টোরাল কলেজ হলো একদল নির্বাচকের একটি সংস্থা, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করে। প্রতিটি রাজ্যের আইনসভা নির্ধারণ করে যে রাজ্যটিতে কতজন নির্বাচক থাকবে, এবং এই নির্বাচকরা সাধারণত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জনপ্রিয় ভোটের বিজয়ীর দ্বারা নির্বাচিত হন। ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেমের সমালোচনা করা হয়েছে কারণ এতে প্রায়শই এমন परिस्थिति সৃষ্টি হয় যেখানে জনপ্রিয় ভোট না জেতার পরেও প্রার্থী রাষ্ট্রপতি হন। উদাহরণস্বরূপ, ২০০০ সালে জর্জ ডাব্লিউ বুশ জনপ্রিয় ভোটে প্রায় ৫০০,০০০ ভোটে হেরে যান, কিন্তু তিনি নির্বাচকদের ভোটে জিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ইলেক্টোরাল কলেজ যেভাবে প্রার্থীদের নির্বাচন করে তা কয়েকটি রাজ্যের বাইরে সব ভোটারের ভোটের ওজনকে অসম করে তোলে। কারণ ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্যগুলিতে কম ভোটার-প্রতি নির্বাচক থাকে। এই ভারসাম্যহীনতা প্রায়শই কম জনবহুল রাজ্যগুলিকে অতিরিক্ত প্রভাব দেয়।
ইলেক্টোরাল কলেজের পক্ষে যুক্তি
ইলেক্টোরাল কলেজ আমাদের রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একটি জটিল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এটি নিশ্চিত করে যে আমাদের দেশের প্রতিটি রাজ্য ও ডিস্ট্রিক্টের নাগরিকদের ভোট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলে। ইলেক্টোরাল কলেজ ছাড়া, শুধুমাত্র বৃহত্তর রাজ্যগুলোই প্রেসিডেন্টনির্বাচনকে প্রভাবিত করবে, কারণ তাদের জনসংখ্যা বেশি থাকায় তারা বেশি নির্বাচক পাবে। ইলেক্টোরাল কলেজ আমাদের রাষ্ট্রের প্রতিটি অংশের সুষ্ঠু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে, যা আমাদের গণতন্ত্রের একটি মূলনীতি।