মশার ইংরেজি কী? বিস্তারিত জেনে নিন এখানে
আমি আজ আপনাদের সাথে আমাদের পরিচিত একটি কীটপতঙ্গ নিয়ে আলোচনা করব। এটি এমন একটি বিরক্তিকর সৃষ্টি যা আমাদের সবারই জানা এবং ঘৃণা করা। এটি আমাদের ঘুমকে ব্যাহত করে, আমাদের ত্বকে চুলকায় এবং কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক রোগও ছড়ায়। হ্যাঁ, আমি কথা বলছি মশা সম্পর্কে।
আজকে আমরা মশা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব, যা আমাদের এই বিরক্তিকর কীটপতঙ্গের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সাহায্য করবে। আমরা মশার ইংরেজি নাম, বৈজ্ঞানিক নাম এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করব। এছাড়াও, আমরা মশা নিয়ন্ত্রণের উপায়, মশা দংশনের প্রতিকার এবং মশা সম্পর্কিত কিছু প্রচলিত তথ্য নিয়েও আলোচনা করব। তাই প্রস্তুত হয়ে যান মশা সম্পর্কে সব কিছু জানার জন্য এবং এই বিরক্তিকর কীটপতঙ্গের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য।
মশাকে ইংরেজি কী বলে
মশা একটি অত্যন্ত সাধারণ পোকা যা সারা বিশ্বে পাওয়া যায়। এটি এমন একটি পোকা যা অসুস্থতা ছড়াতে খ্যাতিমান। মশা-বাহিত রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া অন্যতম। তবে মশা সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে যা আমাদের সবাইকে জানা উচিত।
মশা-এর ইংরেজি কী? মশা-কে ইংরেজিতে ‘মস্কিটো’ বলা হয়। এটি একটি ছোট পোকা যা সাধারণত কালো বা বাদামী রঙের হয়। এদের দুটি ডানা এবং একটি লম্বা সুড় থাকে। মশা স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখির রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। মশা পানিতে ডিম পাড়ে এবং ডিম থেকে লার্ভা বের হয়। এই লার্ভা পানির মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং পরে পিউপা হয়। পিউপা থেকেই মশা বের হয়।
মশারা আমাদের জীবনের জন্য অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এগুলি রোগ ছড়ায়, আমাদের ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই মশা থেকে নিজেকে রক্ষা করা জরুরি। তুমি মশা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মশারি ব্যবহার করতে পারো, মশা তাড়ানো ক্রিম ব্যবহার করতে পারো এবং ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে পারো।
মশার বৈজ্ঞানিক নাম
মশা একটি সাধারণ কীটপতঙ্গ যা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। এদের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যুলেক্স পিপিয়েন্স। এরা ডিপ্টেরা পতঙ্গদের একটি দলের অন্তর্গত এবং এদের প্রায় ৩৫০০টি প্রজাতি রয়েছে। মশারা সাধারণত ছোট এবং বাদামী রঙের হয়, তবে এদের রং ধূসর থেকে কালো হতে পারে। এদের দুটি ডানা রয়েছে এবং তাদের মাথায় একটি লম্বা সূঁচালো মুখ থাকে যা তারা রক্ত খাওয়ার জন্য ব্যবহার করে।
মশার পেটে একটি পাইপলাইন থাকে যা রক্ত শোষণ করার সময় ফুলে ওঠে। মশারা মশার ডিম পাড়ে যা সাধারণত পানিতে বা আর্দ্র স্থানে পাওয়া যায়। ডিম ফুটে বাচ্চা মশারা বের হয় যেগুলিকে লার্ভা বলা হয়। লার্ভা পানিতে বাস করে এবং ছোট জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ খেয়ে বেড়ে ওঠে। কিছু সময় পর লার্ভা পিউপাতে পরিণত হয় এবং তার ভিতরে একটি প্রাপ্তবয়স্ক মশা বিকশিত হয়। পিউপা থেকে মশা বের হয় এবং রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। মশারা বিভিন্ন রোগ যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া ছড়াতে পারে।
মশার বৈশিষ্ট্য
মশা হচ্ছে ক্ষুদ্রাকার কীটপতঙ্গ যা মূলত রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। এদের শরীরের দৈর্ঘ্য সাধারণত কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মশার ছয়টি পা এবং দুটি ডানা রয়েছে। এদের দেহ সাধারণত কালো বা বাদামি রঙের হয়।
মশার সবচেয়ে চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এদের রক্ত শোষণ করার ক্ষমতা। এরা তাদের মুখের অংশকে একটি পাতলা নলের মতো দীর্ঘায়িত করে ত্বকের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে রক্ত শোষণ করে। মশার মুখের অংশে দুটি ছোট ছুরি থাকে যা ত্বককে ছিদ্র করতে সাহায্য করে। রক্ত শোষণ করার সময় মশা লালা নিঃসরণ করে যা রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। এই লালাই মশার কামড়ের জ্বালাভাবের জন্য দায়ী।
মশা সাধারণত ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাধারণত পানির মধ্যে পাড়া হয়। ডিম ফুটে বাচ্চা মশা ওঠে যা লিংসা নামে পরিচিত। লিংসা জলেই বেড়ে উঠে। নির্দিষ্ট সময় পর লিংসা পুতুল হয়ে যায় এবং পুতুল থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মশা বের হয়ে আসে।
মশা নিয়ন্ত্রণ উপায়
এদিকে মশা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি জ্বালাময় উপদ্রব। এদের কামড়ে জ্বর, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া মতো নানান রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মশা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। এই ব্লগে, আমরা মশা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
প্রথমত, আপনার বাড়ি এবং আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন। মশারা জল জমে থাকা জায়গায় ডিম পাড়ে। তাই বাড়ির আশেপাশে কোনো জল জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। ছাদে বা বারান্দায় কোনো পাত্রে বা বালতিতে জল জমতে দেওয়া উচিত নয়। ফুলের টব বা অন্যান্য পাত্রে যে জল থাকে তাও নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, মশারি ব্যবহার করুন। মশারি মশাকে আপনার শরীরে আসতে বাধা দেয়। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা অভ্যাস করুন। মশারির ফাঁকগুলো যেন ঠিকঠাক বন্ধ আছে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
তৃতীয়ত, রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন। রিপেলেন্ট মশাকে আপনার ত্বকে আসতে বাধা দেয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের রিপেলেন্ট পাওয়া যায়। আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত রিপেলেন্টটি ব্যবহার করুন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে রিপেলেন্ট ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
চতুর্থত, কয়েল বা ভ্যাপোরাইজার ব্যবহার করুন। কয়েল বা ভ্যাপোরাইজার থেকে মশা তাড়ানোর উপাদান নির্গত হয়। ঘরে বা ঘরের বাইরে মশা তাড়াতে কয়েল বা ভ্যাপোরাইজার ব্যবহার করতে পারেন। তবে কয়েল বা ভ্যাপোরাইজারের ধোঁয়া শ্বাসে নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
অবশেষে, মশা নিয়ন্ত্রণে জৈবিক পদ্ধতিও ব্যবহার করতে পারেন। মশা নিধনকারী উদ্ভিদ যেমন তুলসী, পুদিনা, লেমন গ্রাস, রোজমেরি ইত্যাদি আপনার বাড়ির আশেপাশে লাগান। এই উদ্ভিদগুলো থেকে নির্গত গন্ধ মশা তাড়াতে সাহায্য করে।
মশা দংশন প্রতিকার
মশা বহন করে এমন প্রায় 700টি ভাইরাস, পরজীবী এবং ব্যাকটেরিয়াগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। মশা দংশন প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল মশারী ব্যবহার করা। মশারী একটি পোর্টেবল, হালকা ওয়জনের বিছানার কভার যা মশাকে মানুষকে দংশন করতে বাধা দেয়। মশারী ব্যবহারের পাশাপাশি, মশা প্রতিরোধক স্প্রে বা লোশন লাগানোও মশা দংশন প্রতিরোধের জন্য কার্যকর।
এই স্প্রে বা লোশনগুলোতে প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক উপাদান থাকে যা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। মশার প্রজননস্থল কমিয়েও মশার দংশন প্রতিরোধ করা যায়। মশারা সাধারণত স্থির জলে ডিম পাড়ে, তাই ঘরের আশেপাশে জল জমার স্থান, যেমন বালতি, পানির ট্যাংক এবং পুরানো টায়ারে জল জমতে দেওয়া উচিত নয়। এছাড়াও, মশারা পচা পানি পছন্দ করে, তাই রান্নাঘরের সিঙ্ক এবং বাথরুমের টয়লেট পরিষ্কার রাখা উচিত।
মশা সম্পর্কিত প্রচলিত কিছু তথ্য
মশা হচ্ছে কীটপতঙ্গের পক্ষযুক্ত একটি বিভাগ। এরা মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। মশা মাথার পেছন থেকে উৎপন্ন তাদের দীর্ঘ পাল্লার চুষাকার মুখের অংশের মাধ্যমে রক্ত খায়। মশারা পুরো বিশ্ব জুড়ে পাওয়া যায় এবং প্রায় ৩,৫০০ প্রজাতির মশা রয়েছে।
মশারা যে কেবল রক্তেই বেঁচে থাকে তা নয়, তাদের প্রজননের জন্য মহিলাদের একটি রক্তের খাবারের প্রয়োজন হয়। পুরুষ মশা শুধুমাত্র ফুল এবং উদ্ভিদ থেকে মধু এবং ফলের রস খায়। মশা একটি স্ত্রী মশা প্রতি রাতে প্রায় ১০০টি ডিম পাড়তে পারে। এই ডিমগুলি সাধারণত পানিতে পাড়া হয় এবং দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ফুটে বের হয়। লার্ভাগুলি পানিতে বাস করে এবং অ্যালগা এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী খায়। লার্ভাগুলি পিউপা পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায়, যেখানে তারা একটি শক্ত খোলসের মধ্যে রূপান্তরিত হয়। পিউপা পর্যায়টি সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং এরপর মশাটি পিউপা খোলস থেকে বেরিয়ে আসে।
মশারা অনেক রোগের বাহক, যার মধ্যে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, চিকুনগুনিয়া এবং ইয়েলো ফিভার অন্যতম। এই রোগগুলি মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষে ছড়ায়। মশার কামড় প্রতিরোধে মশারি ব্যবহার করা, মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালানো এবং শরীর ঢেকে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তুমি মশার প্রজননের জন্য সম্ভাব্য স্থানগুলি, যেমন স্থির পানি এবং পানি জমে থাকা পাত্র, পরিষ্কার রাখার মাধ্যমেও মশার কামড় প্রতিরোধে সাহায্য করতে পার।