জামাই এরারুট দেয়ার নিয়ম: আপনার স্বাস্থ্য এবং হজমের জন্য পূর্ণাঙ্গ গাইড
বেঙ্গলি শাড়ির সঙ্গে জামাইষষ্ঠীর যেন এক অচ্ছেদ্য সূত্র জড়িয়ে আছে। আর জামায়ের সঙ্গে আরও একটা জিনিস আমাদের সবার মনে পড়ে। আর তা হল এরারুট। শুধু কি জামায়? বিশেষ দিনের খাবার বললেই এরারুট যেন মনে পড়ে যায়। এত জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে এরারুটের গুণাবলীই একমাত্র কারণ। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হল জামায় এরারুট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা।
জামায় এরারুট দেয়ার প্রয়োজনীয়তা
জামায় এরারুট দেওয়া খুবই দরকারি একটি বিষয়। এটি জামার কুটিলতা দূর করতে এবং তাকে মসৃণ করে তুলতে সাহায্য করে। এরারুট একটি প্রাকৃতিক স্টার্চ যা মারান্তা গাছের শিকড় থেকে উৎপন্ন হয়। এটি একটি অস্বচ্ছ, সাদা গুঁড়ো যা জলে মেশালে একটি পেস্ট তৈরি করে। এই পেস্টটি জামায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে তা শুষ্ক হয়ে যায় এবং একটি সুরক্ষামূলক আস্তরণ তৈরি করে। এই আস্তরণটি জামাকে ময়লা এবং দাগ থেকে রক্ষা করে এবং তাকে মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখে।
এরারুট কী এবং এর গুণাবলী
এরারুট হলো একটি স্টার্চি রুট সবজি যা বিশ্বের উষ্ণ ক্রান্তীয় অঞ্চলে চাষ করা হয়। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা, কিন্তু এটি এখন এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেও পাওয়া যায়। এরারুটের রাইজোম (ভুগর্ভস্থ স্টেম) শুকিয়ে এবং গুঁড়া করে এরারুটের আটা তৈরি করা হয়।
এরারুটের আটায় 90% এরও বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে, যার মধ্যে প্রায় সবই স্টার্চ আকারে থাকে। এতে ভিটামিন এবং খনিজের পরিমাণও কম, তবে এটি গ্লুটেন মুক্ত এবং সহজে হজমযোগ্য। এরারুটের আটার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) কম, যার অর্থ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। এটি খাদ্যকে ঘন করতে এবং সস, স্যুপ এবং বেকড পণ্যে বাইন্ডার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
জামায় এরারুট ব্যবহারের সঠিক মাত্রা
জামায় এরারুট দেয়ার সঠিক মাত্রাটা জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি একটি তরল ঘনকারক যা খুব সহজেই জামকে যেতে পারে। সাধারণত, প্রতি কাপ জামের জন্য ১-২ টেবিল চামচ এরারুট ব্যবহার করার সুপারিশ করা হয়। যদি তুমি আরও गाढ़ा জাম চাও, তাহলে ২ টেবিল চামচ এরারুট ব্যবহার করতে পারো। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে যত বেশি এরারুট ব্যবহার করবে, ততই তোমার জাম ভারী এবং চিটচিটে হয়ে উঠবে। তাই, নিজের পছন্দ অনুযায়ী সঠিক মাত্রাটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করো।
মূলত এরারুট যোগ করার সময়, এটিকে আস্তে আস্তে যোগ করো এবং জামকে ভালোভাবে নাড়তে থাকো। এটি নিশ্চিত করবে যে এরারুট সমানভাবে মিশে গেছে এবং কোনও গুটি বা পিণ্ড তৈরি হয়নি। যদি তুমি চানাকচুর মিশ্রণ তৈরি করতে চাও, তাহলে এরারুট যোগ করার আগে কর্নস্টার্চ বা ময়দার সাথে মিশিয়ে নিতে পারো। এটি জামটিকে আরও মসৃণ এবং রেশমের মতো করবে।
এরারুট ব্যবহারের সময় মনে রাখার আরেকটি জিনিস হল এটি তাপমাত্রার চেঞ্জের প্রতি সংবেদনশীল। তাই, এরারুট যোগ করার পরে জামটিকে সরাসরি উচ্চ তাপে রান্না করা এড়ানো উচিত। এটি জামটিকে জমাট বাঁধার এবং একটি আঠালো গঠন তৈরি করার কারণ হতে পারে। পরিবর্তে, মাঝারি আঁচে রান্না করো এবং জামটি ঘন হতে শুরু করলে আঁচ কমিয়ে দাও।
এরারুট মেশানোর সেরা সময়
রান্নার সময় যখন এরারুট মেশানোর সবচেয়ে ভালো সময় তা জানাটা খুবই জরুরি। এরারুট মেশানোর আগে খাবারটি ভালোভাবে ফুটানো দরকার। এরপর সামান্য করে এরারুট মিশিয়ে ঘন হতে দিন। এরারুট মেশানোর সময় একটু একটু করে মেশানো দরকার, যাতে কোনো গোলা না হয়। এরারুট মেশানোর পর আরো কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নেওয়া দরকার, যাতে এরারুট ভালোভাবে সেঁধে যায়। এরারুট মেশানোর শেষে স্বাদমতো নুন-মরিচ দিয়ে দিতে হবে। এই নিয়ম মেনে চললে তুমি সবসময় সুন্দর ঘন এবং সুস্বাদু খাবার রান্না করতে পারবে।
এরারুট ঠিকভাবে মেশানোর পদ্ধতি
আমাদের রান্নাঘরে এরারুট সম্ভবত সর্বাধিক ব্যবহৃত ঘনকারকগুলির মধ্যে একটি। তবে, আপনি কি জানেন যে আপনি যদি এটিকে সঠিকভাবে মিশ্রিত না করেন তবে এটি আপনার রেসিপিতে গুটিকা তৈরি করতে পারে? এরারুট সঠিকভাবে মেশানোর জন্য, আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
- একটি ছোট বাটিতে কিছু ঠান্ডা জল নিন।
- এরারুটের সমান পরিমাণ অন্য একটি ছোট বাটিতে নিন।
- ধীরে ধীরে এরারুটকে জলে দিন এবং ভালভাবে মেশান until you get a smooth paste.
- এই পেস্টটিকে সরাসরি আপনার রেসিপিতে যোগ করুন।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করে, আপনি নিশ্চিত করতে পারেন যে আপনার রেসিপিতে কোন গুটিকা তৈরি হবে না এবং এরারুট রান্না করা খাবারকে সুন্দরভাবে ঘন করে তুলবে।
জামায় এরারুট ব্যবহারের সাবধানতা
আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিশু জন্মের পর থেকে প্রাথমিক কিছু খাবারের সাথে এরারুট পায়েশ খেতে শুরু করে। জামায়ের এটি অতি প্রিয় ও পুষ্টিকর খাবার। খেতে সুস্বাদু বলে সবাই খেতে পছন্দ করে। কিন্তু সব সময় সঠিক নিয়মে খাওয়ার ফলে এর সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। তাই এর সুবিধা পাওয়ার জন্য জামায়ের এরারুট দেয়ার নিয়ম কী তা জেনে নেওয়া জরুরি।
সাধারণত জন্মের তিন থেকে চার মাস পর থেকে জামায় কে এরারুট খাওয়ানো শুরু করতে হয়। তবে শিশুটি যদি ছয় মাসের কম বয়সী হয়, তবে খুব কম পরিমাণ এরারুট খাওয়াতে হবে। এরারুট পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হলেও ছয় মাসের কম বয়সী শিশুর জন্য এটা হজম করা খুব কষ্টকর। তাই এমন বয়সী শিশুকে এরারুট খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শুরুর দিকে এরারুট এক চামচ দুধ বা জলের সাথে মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়ানো যাবে। তবে খুব বেশি পরিমাণে একসাথে এরারুট খাওয়ানো ঠিক নয়। এটি হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শিশুটি যদি এরারুট খেয়ে অস্বস্তি বোধ করে বা পেট ফাঁপা গ্যাস হয় তবে খাওয়ানো বন্ধ করে দিতে হবে।