সবচেয়ে বয়স্ক জীব: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচে এমন প্রাণীগুলির মস্ত তালিকা
আমি সুখী যে তুমি আমার সাথে আছো, কারণ আজ আমি তোমাদের কিছু অবিশ্বাস্য দীর্ঘজীবী প্রাণীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছি। আমরা জলজ, স্থলজ, পক্ষী, সরীসৃপ এবং স্তন্যপায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণীদের অন্বেষণ করব। এই আকর্ষণীয় প্রাণীদের জীবনচক্র সম্পর্কে জানার জন্য প্রস্তুত হও, যাদের আয়ুষ্কাল আমাদের অবাক করে দেবে। তাদের দীর্ঘজীবনের গোপনীয়তা উন্মোচন করতে যাচ্ছি। তাহলে আর দেরি না করে, চলো বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণীদের অসাধারণ যাত্রায় ডুব দিই।
জলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী
হিসেবে পরিচিত “গ্রিনল্যান্ড শার্ক” । এই প্রজাতির একটি শার্কের সর্বোচ্চ রেকর্ডকৃত বয়স প্রায় 512 বছর। এটি আমাদের গ্রহে বসবাসকারী যেকোনো কশেরুকী প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী হিসেবে বিবেচিত হয়।
গ্রিনল্যান্ড শার্ক আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে গভীর সমুদ্রে বসবাস করে। এটি একটি শীতল-вод প্রাণী যা প্রায় -2 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে। এর ধীরে ধীরে বளার হার এবং অত্যন্ত কম বিপাকের হার এর দীর্ঘায়ুর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। গ্রিনল্যান্ড শার্কের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এর মাংসে ট্রাইমিথাইল্যামিন-এন-অক্সাইড (টিএমএও) নামে একটি বিষাক্ত যৌগ থাকে, যা একে অন্যান্য প্রাণীর জন্য অখাদ্য করে তোলে।
স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী
টি হলো গ্রীনল্যান্ড শার্ক। এই বিশাল মাছটি 400 বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে বলে ধারণা করা হয়। গ্রীনল্যান্ড শার্কটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অত্যন্ত ঠান্ডা এবং গভীর জলে বাস করে। এটি একটি খুব ধীর-গতির প্রাণী, প্রতি ঘন্টায় মাত্র 1.2 কিলোমিটার গতিতে সাঁতার কাটে। গ্রীনল্যান্ড শার্কের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মাছ, সীল এবং এমনকি অন্য শার্কও।
এই দীর্ঘজীবনের পেছনে কী রহস্য রয়েছে তা নিয়ে গবেষকরা এখনও অধ্যয়ন করছেন। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে গ্রীনল্যান্ড শার্কের ধীর বিপাক, ঠাণ্ডা পরিবেশ এবং কম প্রজনন হার এর দীর্ঘায়ুতে ভূমিকা রাখে। গ্রীনল্যান্ড শার্কের প্রজনন হার খুবই কম, প্রতি বছর প্রায় 300 বছর পরে মাত্র কয়েকটি বাচ্চা জন্ম দেয়।
গ্রীনল্যান্ড শার্কের এই দীর্ঘায়ু প্রকৃতিতে বিবর্তনের একটি আশ্চর্যজনক উদাহরণ। এটি আমাদেরকে প্রাণীজগতের বিচিত্রতা এবং অভিযোজন ক্ষমতা সম্পর্কে আরও জানতে সাহায্য করে।
পক্ষীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী
পাখির প্রজাতির মধ্যে সর্বাপেক্ষা দীর্ঘজীবী প্রাণী হল রাজহাঁস বা সোয়ান। এই প্রজাতির পাখি গড়ে ৭০ থেকে ৮০ বছর বাঁচে। যদিও, কিছু রাজহাঁস ১০০ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে। তবে, রাজহাঁসের দীর্ঘায়ু নির্ভর করে তাদের বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস এবং শিকারীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয়ের উপর।
সরীসৃপের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী
সরীসৃপদের মধ্যে আমার প্রিয় প্রাণীটি হলো কচ্ছপ। কচ্ছপ কেবল তার দীর্ঘায়ুর জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এর আস্তানাটিও অসাধারণ। একটি কচ্ছপ তার খোলসের ভিতরে তার মাথা, পা, এবং লেজটি টেনে নিয়ে সুরক্ষিত থাকতে পারে। কচ্ছপেরা বিভিন্ন আকার এবং আকারে আসে, সবচেয়ে ছোট প্রজাতিটি প্রায় 4 ইঞ্চি লম্বা, যখন সবচেয়ে বড় প্রজাতিটি 8 ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কচ্ছপেরা সর্বভুক প্রাণী, যারা উদ্ভিদ এবং প্রাণী উভয়ই খায়। তারা গড়ে প্রায় 50 থেকে 80 বছর বেঁচে থাকে, তবে কিছু প্রজাতি 150 বছরেরও বেশি সময় বাঁচতে পারে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী
আমরা সবাই জানি, স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের দীর্ঘায়ুর জন্য পরিচিত। তাদের মধ্যেও কিছু প্রজাতি অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যের কারণে অল্প বয়সেই মারা যায়, আবার কিছু প্রজাতি শতাব্দী ধরে বেঁচে থাকে। তুমি কি কখনও ভেবে দেখেছো কোন স্তন্যপায়ী প্রাণী সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে? চলো আজ জেনে নিই স্তন্যপায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী:
গ্রিনল্যান্ড শার্ক (Somniosus microcephalus): গ্রিনল্যান্ড শার্ক হল সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে এমন স্তন্যপায়ী প্রাণী। এই প্রাণীটির গড় আয়ু প্রায় ৪০০ বছর। তবে সর্বাধিক বয়স্ক গ্রিনল্যান্ড শার্কটির বয়স পাওয়া গেছে ৫১২ বছর। এই প্রাণীটির দীর্ঘায়ুর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা এর ধীর বিপাকক্রিয়া ও শীতল পরিবেশে বাস করাকে দায়ী করেছেন।
বোহেড হোয়েল (Balaena mysticetus): বোহেড হোয়েল হল দ্বিতীয় সবচেয়ে দীর্ঘজীবী স্তন্যপায়ী প্রাণী। এই প্রাণীটির গড় আয়ু প্রায় ২৬০ বছর। তবে কিছু বোহেড হোয়েলের বয়স ২৮০ বছরেরও বেশি হতে দেখা গেছে। এই প্রাণীটির দীর্ঘায়ুর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা এর বিশাল আকার ও মেদযুক্ত শরীরকে দায়ী করেছেন।
ফিন হোয়েল (Balaenoptera physalus): ফিন হোয়েল হল তৃতীয় সবচেয়ে দীর্ঘজীবী স্তন্যপায়ী প্রাণী। এই প্রাণীটির গড় আয়ু প্রায় ৯০ বছর। তবে কিছু ফিন হোয়েলের বয়স ১৫০ বছরেরও বেশি হতে দেখা গেছে। এই প্রাণীটির দীর্ঘায়ুর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা এর গতিশীলতা ও উচ্চ সহনশীলতাকে দায়ী করেছেন।
এই তিনটি স্তন্যপায়ী প্রাণী হল পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী। এই প্রাণীগুলোর দীর্ঘায়ু বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে, যেমন তাদের জিনগত গঠন, পরিবেশ, এবং খাদ্যাভ্যাস।
কোন প্রাণীর দীর্ঘ জীবনযাপনের কারণ
পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণীটি কোনটি, তা জানার জন্য আমার একটু গবেষণা করতে হয়েছে। অনেক প্রাণীর আয়ুষ্কাল সম্পর্কে জানার পর, আমি আবিষ্কার করেছি যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী হল গ্রিনল্যান্ড শার্ক (Somniosus microcephalus)। এই অসাধারণ মাছটি সত্যিই দীর্ঘ জীবনযাপন করে, গড়ে 272 বছর। কিন্তু এর আয়ুষ্কাল 500 বছর পর্যন্তও হতে পারে! দীর্ঘজীবনের কারণটি জানা দরকার ছিল। আমার গবেষণার ফলে, আমি এই উপসংহারে পৌঁছেছি যে গ্রিনল্যান্ড শার্কের দীর্ঘজীবনের পেছনে কয়েকটি অনন্য উপাদান জড়িত। প্রথমত, এদের বিপাকের হার খুব ধীর। তারা প্রায় 100 বছর বয়সে যৌন পরিপক্ক হয় এবং প্রতি বছর শুধুমাত্র একবার ডিম পাড়ে। দ্বিতীয়ত, তারা খুব ঠান্ডা জলে বাস করে, যা তাদের কোষের ক্ষতির হারকে হ্রাস করে। তৃতীয়ত, তাদের একটি দক্ষ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যা তাদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এই সমস্ত কারণ মিলে গ্রিনল্যান্ড শার্ককে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী হিসাবে পরিণত করেছে।