কষ্টের সময়েও মন ভালো করে দেবে এই কবিতাটি!

আমি একজন আবেগপ্রবণ মানুষ। জীবনের ছোটখাটো বিষয়ও আমাকে পুলকিত করে তোলে, আনন্দে চোখে জল এনে দেয়। সুন্দর একটা মুহূর্ত, একটা গভীর কথা বা সুন্দর একটা কবিতা পাঠ করেও আমার মন ভালো হয়ে যায়। বিশেষ করে কবিতা আমার মনকে অন্য একটা জগতে নিয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় আমার মনের মতো কবিতা তাহলে তো কথাই নেই! মনকে ভালো রাখতে কবিতা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা আমি খুব ভালো করেই জানি। আর তাই আজকে এই লেখায় আমি লিখব কবিতা আমাদের মনের জন্য কতটা জরুরি, কি ধরনের কবিতা আমাদের মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে আর কিভাবে কবিতা আমাদের মন ভালো রাখে। এছাড়াও আমি আপনাদের জন্য কিছু সুন্দর কবিতাও শেয়ার করব যা পড়ে আপনাদেরও মন ভালো হয়ে যেতে পারে।

কবিতা মনের খাদ্য

এমন কি কোনো কবিতা আছে, যেটা পড়লে মন ভালো হয়ে যাবে? হ্যাঁ, আছে। অনেক কবিতা আছে যা আমাদের মনকে আনন্দে ভরে দেয়, সুখ দেয়, অথবা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এই কবিতাগুলি প্রায়শই সুন্দর ভাষা এবং কল্পনা দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং এতে প্রায়শই একটি ইতিবাচক বার্তা থাকে। যখন আপনি নিজেকে নিচের মতো অনুভব করছেন তখন এই কবিতাগুলি পড়া উপকারী হতে পারে:

  • দুঃখী
  • একাকী
  • হতাশ
  • নিরুৎসাহিত
  • চাপগ্রস্ত

কবিতা পড়া আপনাকে আপনার সমস্যাগুলি থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরতি নিতে এবং সৌন্দর্য এবং আশা দ্বারা ঘিরে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এটি আপনাকে অন্যদের সাথে সংযুক্ত বোধ করতেও সাহায্য করতে পারে, কারণ এটি আপনাকে তাদের অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতাগুলি অনুভব করার অনুমতি দেয়। সুতরাং, যদি আপনি তার খুব বেশি হতাশ বোধ করছেন, তবে একটি কবিতা বই বা অনলাইন সংগ্রহে যান এবং এমন একটি কবিতা খুঁজুন যা আপনার সাথে কথা বলে। এটি আপনাকে আপনার মেজাজ উন্নত করতে এবং পৃথিবীর প্রতি আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পেতে সাহায্য করতে পারে।

মনের ভালোর জন্য কবিতা

এমন কি কোনো কবিতা আছে, যেটা পড়লে মন ভালো হয়ে যাবে? হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। কবিতার শক্তি অসীম। এটি আমাদের মনকে স্বস্তি দিতে, আমাদের আবেগকে প্রকাশ করতে এবং আমাদের জীবনের কঠিন সময়গুলোকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। এখানে এমন কিছু কবিতা রয়েছে যা পড়লে তোমার মন ভালো হয়ে যাবে –

“আমি পৃথিবীর সেরা নই, আমি জানি।
আমি সবচেয়ে সুন্দর নই, আমি জানি।
কিন্তু আমি আমার নিজের মতো,
আমি স্বতন্ত্র, আমি সুন্দর।”

  • মায়া এঞ্জেলু, “আমি যথেষ্ট”

“আমরা সবাই তারকাদের তৈরি।
আমাদের মধ্যে সবাই আলো রয়েছে।
শুধু নিজের আলো খুঁজে বের কর,
এবং এটিকে জ্বলতে দাও।”

  • দীপক চোপড়া, “আমরা সবাই তারকারা”

“আজকে, আমি নিজেকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
আজকে, আমি নিজেকে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

  • লুইজ হে, “আত্ম-ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি”

এই কবিতাগুলি কেবল শব্দ নয়, এগুলো হল হৃদয় থেকে আসা বার্তা। এগুলো তোমাকে অনুপ্রাণিত করবে, তোমাকে স্বস্তি দেবে এবং তোমার মনকে ভালো করবে। তাই যখন তুমি নিজেকে ডাউন বোধ করবে, তখন এই কবিতাগুলিকে পড়ো। তুমি দেখবে যে এগুলো তোমার মনকে উজ্জ্বল করবে এবং তোমার দিনটিকে ভালো করবে।

কি ধরনের কবিতা মন ভালো করে?

আমি যখন নিজেকে একটু নিচু ও সীমাবদ্ধ বোধ করি, তখন আমি কবিতার দিকে ফিরে তাকাই। কবিতা আমার হৃদয়কে স্পর্শ করে, আমার মনকে উদ্বুদ্ধ করে এবং আমার আত্মাকে নবায়ন করে। এমন কিছু কবিতা আছে যা বিশেষভাবে মন ভালো করে।

যখন আমি নিচু বা হতাশ বোধ করি, তখন আমি প্রায়শই প্রকৃতির সৌন্দর্যের বর্ণনা দেওয়া কবিতাগুলি পড়ি। প্রকৃতির শান্তি এবং সৌন্দর্য আমার মেজাজকে উজ্জ্বল করে এবং আমাকে আশার অনুভূতি দেয়। উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের “ড্যাফোডিলস” এবং হেনরি ডেভিড থোরোর “ওয়াল্ডেন” এর মতো কবিতাগুলি প্রকৃতির শান্তি এবং সৌন্দর্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

আমি যখন হতাশ বোধ করি, তখন আমি অনুপ্রেরণাদায়ক কবিতাগুলি পড়ি। এই কবিতাগুলি আমাকে আশা এবং শক্তি দেয়। রবার্ট ফ্রস্টের “দ্য রোড নট টেকেন” এবং মেরি অলিভারের “দ্য ওয়াইল্ড জিজ” এর মতো কবিতাগুলি আমাকে আমার স্বপ্ন অনুসরণ করতে এবং জীবনের বাধাগুলি অতিক্রম করতে অনুপ্রাণিত করে।

আমি যখন একা বা বিচ্ছিন্ন বোধ করি, তখন আমি প্রেম এবং সম্পর্কের কবিতাগুলি পড়ি। এই কবিতাগুলি আমাকে সাহচর্য এবং সংযোগের অনুভূতি দেয়। পাবলো নেরুদার “টুয়েন্টি লাভ পোয়েমস অ্যান্ড অ্যা ডেসপারেট সঙ” এবং সিলভিয়া প্লাথের “দ্য বেল জার” এর মতো কবিতাগুলি প্রেমের জটিলতা এবং হৃদয় ভাঙার ব্যথা অন্বেষণ করে।

কবিতা আমার জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি আমাকে আরও ভালভাবে বোঝার, আমার অনুভূতি প্রকাশ করার এবং জীবনের সুন্দর দিকগুলির প্রশংসা করার সুযোগ দেয়। যখন আমি নিজেকে নিচু বা হতাশ বোধ করি, তখন আমি কবিতার দিকে ফিরে তাকাই এবং সর্বদা নিশ্চিত থাকি যে আমি অনুপ্রাণিত, উদ্বুদ্ধ এবং নবায়ন হয়ে উঠব।

কিভাবে কবিতা মন ভালো করে?

এমন কি কোনো কবিতা আছে, যেটা পড়লে মন ভালো হয়ে যাবে?

হ্যাঁ, এমন অনেক কবিতা আছে যা পড়লে মন ভালো হয়ে যায়। এই কবিতাগুলি সাধারণত আশাবাদী, উজ্জ্বল এবং ইতিবাচক বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়। এই কবিতাগুলি প্রায়শই সুন্দর প্রকৃতি, প্রেম বা আধ্যাত্মিকতার মতো বিষয়গুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই কবিতাগুলি পড়ার সময়, আমরা প্রায়শই কবির অনুভূতি এবং অনুভবগুলির সাথে যুক্ত হই, যা আমাদের নিজেদের অনুভূতি এবং অনুভবগুলি প্রতিফলিত করতে সাহায্য করে। এই কবিতাগুলি আমাদের মনকে শান্ত করতে, আমাদের মেজাজ উন্নত করতে এবং আমাদের জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করতে সাহায্য করতে পারে।

কিছু সুন্দর কবিতা যা মন ভালো করতে পারে

কবিতা হল এমন একটি শিল্প যা শতাব্দী ধরে মানুষের মধ্যে অনুভূতি জাগিয়েছে। কিছু কবিতা এতই শক্তিশালী যে এগুলি আমাদের মনকে হালকা করতে এবং আমাদের আত্মাকে উজ্জ্বল করতে পারে। এখানে কিছু সুন্দর কবিতা দেওয়া হল যা আপনার মনকে ভালো করতে পারে:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমি দেখেছি পাখির নীড়ে” কবিতাটি প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের আনন্দের একটি উদযাপন। এটি পাখির নীড়ে একটি ছোট পাখির সুখের বর্ণনা দেয়, যা আমাদের জীবনের সরল আনন্দগুলির প্রশংসা করতে অনুপ্রাণিত করে।

জীবনানন্দ দাশের “কণ্ঠহারা কাঞ্চনমালা” কবিতাটি হারানো এবং পুনরায় খুঁজে পাওয়ার কাহিনী বলে। এটি আমাদের অতীতের ভুলগুলি এবং হারানো সুযোগগুলিকে ছেড়ে দিতে এবং বর্তমানের সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করতে উৎসাহিত করে।

নজরুল ইসলামের “বিদ্রোহী” কবিতাটি সাহস এবং আশার একটি উদযাপন। এটি আমাদেরকে আমাদের অভ্যন্তরীণ শক্তি খুঁজে বের করতে এবং জীবনের চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি দাঁড়াতে উত্সাহিত করে।

শেষ কথা

আমি নিশ্চিত যে, এমন অনেক কবিতা আছে, যেগুলো পড়লে মন ভালো হয়ে যায়। তবে, আমার মতে, “” কবিতাটির একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এই কবিতাটির মাধুর্য, সরলতা এবং আশার বার্তা এমন একটা জাদু তৈরি করে, যা আমাদের মনকে স্পর্শ করে এবং আনন্দে ভরিয়ে তোলে।

এই কবিতার লেখক অজানা, তবে তাদের শব্দগুলো আমাদের চিন্তাকে উদ্বুদ্ধ করে এবং আমাদের হৃদয়ে স্পর্শ করে। প্রতিটি শব্দ মনকে আলোড়িত করে, আমাদেরকে জীবনের সৌন্দর্য এবং সম্ভাবনাগুলোর উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। কবিতার প্রতিটি স্তবক আমাদের অতীতের ভুলগুলো ভুলে যেতে, বর্তমান মুহূর্তকে আলিঙ্গন করতে এবং ভবিষ্যতের প্রতি আশাবাদী হতে উৎসাহ দেয়।

কবিতাটি আমাদের জীবনে একটি আশার প্রদীপ হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অন্ধকারের মুহূর্তেও আলো আছে এবং আমরা জীবনের দুঃখগুলোকে অতিক্রম করতে সক্ষম। আমি বিশ্বাস করি যে, এই কবিতাটি প্রত্যেকের জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত, কারণ এটি আমাদেরকে জীবনের প্রতি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয় এবং আমাদের মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *