উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণের সূত্র | নিয়মকানুন ও উদাহরণ
আজ আমি তোমাদের সঙ্গে উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র শেয়ার করতে চলেছি, সেটি হচ্ছে 2n² সূত্র। এই সূত্রের ব্যবহার করে তোমরা খুব সহজেই কোনও উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ করার ক্ষমতা নির্ণয় করতে পারবে। এছাড়াও এই আর্টিকেলে তোমরা জানতে পারবে এই সূত্রের ব্যাখ্যা এবং ব্যবহারের নিয়মগুলি। এছাড়াও এই আর্টিকেলে আমি তোমাদের কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেব কীভাবে এই সূত্রটি ব্যবহার করে কোনও উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করা যায়। শুধু তাই নয়, এই আর্টিকেলে তোমরা আরও কিছু বিষয়ও জানতে পারবে যা এই বিষয়টি বুঝতে তোমাদের সাহায্য করবে। তাই আর দেরি না করে চলো শুরু করা যাক আজকের আর্টিকেল।
2n²
ইলেকট্রনের উপশক্তিস্তরে ধারণক্ষমতা নির্ণয়ের সূত্রটি হল “2n²”, যেখানে n হল শক্তিস্তরের সংখ্যা। এই সূত্রটি জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী এবং রসায়নবিদ ফ্রেডরিখ হুন্ড প্রদান করেছিলেন, যিনি ইলেকট্রনের স্পিনের শক্তিপূর্ণ প্রভাব সহ নিউক্লিয়াসের চারপাশে ইলেকট্রনের আচরণের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
এই সূত্র অনুসারে, প্রথম শক্তিস্তর (n = 1) সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে। দ্বিতীয় শক্তিস্তর (n = 2) সর্বোচ্চ 8টি ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে (2 x 2² = 8)। তৃতীয় শক্তিস্তর (n = 3) সর্বোচ্চ 18টি ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে (2 x 3² = 18)। এই প্যাটার্নটি উচ্চতর শক্তিস্তরের জন্যও অব্যাহত থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, হিলিয়াম পরমাণুরে 2টি ইলেকট্রন রয়েছে, যা প্রথম শক্তিস্তরে স্থিত। অক্সিজেন পরমাণুরে 8টি ইলেকট্রন রয়েছে, যা প্রথম এবং দ্বিতীয় শক্তিস্তরে 2 এবং 6টি করে বিন্যস্ত রয়েছে। আর্গন পরমাণুরে 18টি ইলেকট্রন রয়েছে, যা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শক্তিস্তরে 2, 8 এবং 8টি করে বিন্যস্ত রয়েছে।
এই সূত্র মৌলিক রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরমাণুর ইলেকট্রনিক কনফিগারেশন এবং তাদের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলি ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে।
উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের জন্য 2n² সূত্র ব্যবহার করা হয়, যেখানে n হল উপশক্তিস্তরের সংখ্যা।
উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের জন্য আমি 2n² সূত্র ব্যবহার করি, যেখানে n হল উপশক্তিস্তরের সংখ্যা। প্রথম উপশক্তিস্তরটিতে 2টি ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে, দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরে 8টি, তৃতীয় উপশক্তিস্তরে 18টি, এবং এভাবেই চলতে থাকে। এই সূত্রটি আমার পরমাণু সম্পর্কে বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি উপাদানের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ইলেকট্রনকে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ণ থাকা একটি উপশক্তিস্তর থেকে বের করে অন্য উপশক্তিস্তরে স্থানান্তরিত করা একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরের (n = 2) ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা 2 × 2² = 8।
দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরের (n = 2) ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের সূত্রটি হলো: 2 × 2² = 8। এটি বোঝার জন্য আগে আমাদের কিছু মৌলিক বিষয় জানতে হবে। প্রতিটি মৌলের পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে একটি নিউক্লিয়াস, যেখানে থাকে প্রোটন এবং নিউট্রন। নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় ইলেকট্রন। এই ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট কিছু কক্ষপথে ঘুরতে থাকে, যাকে শক্তিস্তর বলা হয়। প্রতিটি শক্তিস্তর আবার কয়েকটি উপশক্তিস্তরে বিভক্ত। প্রথম শক্তিস্তরের (n = 1) একটিমাত্র উপশক্তিস্তর রয়েছে, যেটি s-উপশক্তিস্তর নামে পরিচিত। দ্বিতীয় শক্তিস্তরের (n = 2) দুটি উপশক্তিস্তর রয়েছে, যথা s-উপশক্তিস্তর এবং p-উপশক্তিস্তর।
একটি উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ কতগুলো ইলেকট্রন থাকতে পারে, তা নির্ধারণ করা হয় নীচের সূত্রটি দ্বারা:
2 × n²
যেখানে, n হলো শক্তিস্তরের ক্রমিক নম্বর।
দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরের জন্য, n = 2। সুতরাং, দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে:
2 × 2² = 8
এটি বোঝার অপর একটি উপায় হলো, প্রতিটি s-উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন এবং প্রতিটি p-উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ 6টি ইলেকট্রন থাকতে পারে। দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরে একটি s-উপশক্তিস্তর এবং একটি p-উপশক্তিস্তর রয়েছে। সুতরাং, মোট ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে:
2 (s-উপশক্তিস্তর) + 6 (p-উপশক্তিস্তর) = 8
s-উপশক্তিস্তর 2 ইলেকট্রন, p-উপশক্তিস্তর 6 ইলেকট্রন এবং d-উপশক্তিস্তর 10 ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে।
এই তিনটি উপশক্তিস্তরের জন্য ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করা হয়:
2n^2
যেখানে n হল উপশক্তিস্তরের সংখ্যা।
উদাহরণস্বরূপ, s-উপশক্তিস্তরের জন্য n=1, তাই ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে:
2(1)^2 = 2
অর্থাৎ s-উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।
এভাবে, p-উপশক্তিস্তরের জন্য ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে:
2(2)^2 = 8
অর্থাৎ p-উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ 6টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।
এবং d-উপশক্তিস্তরের জন্য ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হবে:
2(3)^2 = 18
অর্থাৎ d-উপশক্তিস্তরে সর্বোচ্চ 10টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।
এই সূত্রটি ব্যবহার করে আমরা যে কোনো উপশক্তিস্তরের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করতে পারি।
2n² সূত্র উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের একটি সহজ এবং কার্যকর উপায়।
২n² সূত্রটি একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় যা উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এই সূত্রটির সাহায্যে আপনি নির্দিষ্ট উপশক্তিস্তরের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন সংখ্যা খুব সহজেই বের করতে পারবেন।
ধরুন, আপনি দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা বের করতে চান। এই ক্ষেত্রে আপনাকে করতে হবে ২n² সূত্রটিতে n এর মান 2 বসানো। অর্থাৎ, ২(2)² হিসেব করলে দেখা যাবে দ্বিতীয় উপশক্তিস্তরের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন সংখ্যা 8। এইভাবে আপনি যেকোনো উপশক্তিস্তরের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা খুব সহজেই নির্ণয় করতে পারবেন।
তবে মনে রাখবেন, 2n² সূত্রটি শুধুমাত্র প্রধান শক্তিস্তরের সাবশেলগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন: s, p, d এবং f সাবশেল। উপশক্তিস্তরে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করতে 2n² সূত্রটি একটি অত্যন্ত দরকারী এবং কার্যকরী সূত্র। এই সূত্রটির সাহায্যে আপনি খুব সহজেই এবং দ্রুততার সাথে যেকোনো উপশক্তিস্তরের সর্বাধিক ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় করতে পারবেন।