ইউরিক অ্যাসিড মাত্রা বেশি থাকলে আমের অপকারিতা কি কি?
আপনার ডায়েটের অংশ হিসেবে আম একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল হলেও, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক হতে পারে। এই লেখায়, আমি ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা থাকলে আম খাওয়ার সম্ভাব্য অপকারিতাগুলি খতিয়ে দেখব। আমাদের আলোচনাগুলির মধ্যে রয়েছে পটাশিয়ামের উচ্চ মাত্রা, ফ্রুক্টোজের পরিমাণ বেশি হওয়া, শরীরে প্রদাহ বাড়ানোর সম্ভাবনা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি। এছাড়াও, এই জটিলতাগুলি এড়ানোর জন্য কী কী উপায় রয়েছে, সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে। এই তথ্যগুলি আপনাকে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে আমের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার বোধগম্যতা বাড়াবে।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে আম খাওয়ার সম্ভাব্য অপকারিতা
যদি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে থাকে, তাহলে আম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ আমে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীরে স্ফটিক আকারে জমা হয়ে গেঁটে, কিডনির পাথর এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আমে অক্সালেট নামক একটি যৌগও থাকে, যা ক্যালসিয়ামের সাথে বিক্রিয়া করে কিডনির পাথর তৈরি করতে পারে। তাই, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে থাকলে আম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তিনি আপনাকে নিরাপদে কতটা আম খেতে পারবেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারবেন।
পটাশিয়ামের উচ্চ মাত্রা
আমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। এটি 100 গ্রাম আমে প্রায় 250 মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। যদি তোমার ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে,তাহলে তোমার শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রাও বেশি হতে পারে। এর ফলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং ইউরিক অ্যাসিডের স্ফটিক তৈরি হয়ে গেটেব্যাথ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে আম খাওয়া তোমার জন্য তেমন উপকারী নয়।
ফ্রুক্টোজের পরিমাণ বেশি
থাকায়, আম খাওয়া ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে। ফ্রুক্টোজ একটি প্রাকৃতিক শর্করা যা ফলে পাওয়া যায়। এটি শরীরে মেটাবলাইজ হয়ে ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। যাদের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি তাদের জন্য আম বেশি পরিমাণে খাওয়া উপকারী নয়। কারণ এটি শরীরে আরও ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন করতে পারে, যা গাউটের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকলে আম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করা উচিত।
শরীরে প্রদাহ বাড়াতে পারে
আমাদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই কিছু ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। তবে খাদ্যের মাধ্যমে আমরা আরও ইউরিক অ্যাসিড গ্রহণ করে থাকি। এই ইউরিক অ্যাসিডটি রক্তে মিশে কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তবে আমাদের খাবারে পিউরিনের পরিমাণ বেশি হলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড রক্তে গেঁটে ওঠে এবং গিঁটগুলোতে জমা হয়ে গিঁটে বাতের কারণ হয়।
এছাড়াও, আম খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। আমে পিউরিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এই পিউরিনটি শরীরে গিয়ে ইউরিক অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়। ফলে, আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকলে আম খাওয়া উচিত নয়।
অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় আম খাওয়া উপকারী নয় কারণ আমে পিউরিন নামক পদার্থ থাকে যা শরীরে বিপাক হয়ে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে। বেশি ইউরিক অ্যাসিড শরীরে জমা হয়ে জয়েন্টে ক্রিস্টাল তৈরি করে যা ব্যথা, ফোলা এবং লালচে ভাব সৃষ্টি করে। এছাড়াও আমে ফ্রুকটোজ নামক একধরনের চিনি থাকে যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে। তাই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে আম খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
জটিলতা এড়ানোর উপায়
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে তা শরীরে ক্রিস্টাল তৈরি করে জমা হয়। এটি জয়েন্টের প্রদাহ (গাউট)সহ নানা জটিলতার জন্ম দিতে পারে। এই স্থিতিতে আপনার উচিত প্রোটিন ও পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা। আমে প্রচুর ফ্রুক্টোজ থাকে যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়। তাই ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে আম খাওয়া এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। এছাড়াও মদ্যপান, রেড মিট, সামুদ্রিক খাবার, কলিজা ও কিডনি খাওয়া এই স্থিতিতে এড়িয়ে চলতে হবে।