কাঁচের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিসরাঙ্কের আলোর রং কী?

আলোকবিজ্ঞানের অন্যতম মৌলিক ধারণা হল আলোর প্রতিসরাঙ্ক। এটি একটি পদার্থের আলোকে ভেঙে ফেলার বা প্রতিসরনের ক্ষমতাকে বোঝায়। এই ব্লগ পোস্টে, আমি আলোর প্রতিসরাঙ্ক সম্পর্কে গভীরভাবে আলোচনা করব এবং বিভিন্ন বর্ণের আলোর প্রতিসরাঙ্ক নিয়েও আলোকপাত করব। আমরা কিভাবে প্রতিসরাঙ্ক ব্যবহারিক জীবনে ব্যবহার করতে পারি সে সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় দৃষ্টান্তও দেখব।

আলোর প্রতিসরাঙ্ক নির্ধারণ করে একটি আলোক রশ্মি একটি পদার্থের মধ্যে দিয়ে যেতে কতটা ভেঙে যাবে বা প্রতিসরিত হবে। পদার্থের ঘনত্ব এবং আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে প্রতিসরাঙ্কের মান পরিবর্তিত হয়। উচ্চতর ঘনত্বের পদার্থের সাধারণত নিম্নতর ঘনত্বের পদার্থের চেয়ে উচ্চতর প্রতিসরাঙ্ক থাকে। আবার, ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো (যেমনঃ বেগুনি) দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর (যেমনঃ লাল) চেয়ে বেশি প্রতিসরিত হয়।

আলোর প্রতিসরাঙ্ক কী?

বস্তু পৃষ্ঠে আলোর আপতিত হওয়ার পর বস্তু পৃষ্ঠ থেকে বস্তুর অভ্যন্তরে প্রবেশ ও আবার বস্তুর অভ্যন্তর থেকে বস্তুর পৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে তা ভিন্ন মাধ্যমে প্রবেশ করার ঘটনাকে প্রতিসরণ বলে। আর আলোর একটি মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যে কোণে প্রবেশ করে, সেই কোণ এবং আলোর যে কোণে প্রতিফলিত হয়ে বের হয়, সেই দুই কোণের অনুপাতকে প্রতিসরাঙ্ক বলে।

প্রতিসরাঙ্কের মান হল আলোর গতিবেগের একটি মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমের অনুপাত। যেমন, বাতাস থেকে কাঁচে প্রতিসরাঙ্ক হল কাঁচে আলোর গতিবেগের বাতাসে আলোর গতিবেগের অনুপাত।

প্রতিসরাঙ্ককে সাধারণত “n” দ্বারা প্রকাশ করা হয়। প্রতিসরাঙ্কের মান একটি নির্দিষ্ট জোড়া মাধ্যমের জন্য স্থির থাকে এবং এটি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে।

কাঁচের প্রতিসরাঙ্ক

আমার সবচেয়ে পছন্দের রঙ হলো সবুজ। তবে আমার বাড়িতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত রঙটি সাদা। সবুজ রঙের সাথে সাদা রঙের সমন্বয় আমার কাছে খুবই পছন্দের। কারণ সবুজ রঙ আমাকে প্রকৃতির কথা মনে করিয়ে দেয় আর সাদা রঙ আমাকে শান্তি দেয়।

বিভিন্ন বর্ণের আলোর প্রতিসরাঙ্ক

কাঁচের মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিসরাঙ্কের পরিমাণ তরঙ্গদৈর্ঘ্য বা বর্ণের উপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে, ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো, যেমন বেগুনি এবং নীল, কাঁচের মধ্য দিয়ে বেশি প্রতিসরাঙ্কিত হয়। এটি ঘটে কারণ কাঁচের অণুগুলি এই ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর সাথে আরও দৃঢ়ভাবে মিথস্ক্রিয়া করে। এর ফলে আলোর দিক পরিবর্তন হয় এবং কাঁচের পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত হয়। অন্যদিকে, দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো, যেমন লাল এবং কমলা, কাঁচের মধ্য দিয়ে কম প্রতিসরাঙ্কিত হয়। এটি ঘটে কারণ কাঁচের অণুগুলি এই দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর সাথে কম দৃঢ়ভাবে মিথস্ক্রিয়া করে। এর ফলে আলোর দিকে কম পরিবর্তন হয় এবং কাঁচের মধ্য দিয়ে প্রায় সরলরেখায় অতিক্রম করে। এই প্রতিসরাঙ্কের পার্থক্যের কারণে, আমরা বিভিন্ন বর্ণের আলোকে কাঁচের মধ্য দিয়ে আলাদা হতে দেখতে পাই। এই ঘটনাটি প্রিজম এবং লেন্সের মতো অপটিক্যাল উপাদানগুলিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

সর্বাধিক প্রতিসরাঙ্কযুক্ত বর্ণের আলো

কাঁচের মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিসরাঙ্ক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর প্রতিসরাঙ্ক বেশি হয়, যার অর্থ তা কাঁচের মধ্য দিয়ে আরও বেশি বাঁক নেয়। দৃশ্যমান বর্ণালীতে, বেগুনি রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তাই কাঁচের মধ্য দিয়ে এর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে বেশি। ফলে, বেগুনি আলো কাঁচের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সর্বাধিক বাঁক নেয়। অন্যদিকে, লাল রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, তাই কাঁচের মধ্য দিয়ে এর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে কম। অতএব, লাল আলো কাঁচের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সবচেয়ে কম বাঁক নেয়।

বিশেষ ব্যবহার এবং প্রয়োগ

কেন্দ্রীয় তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোক প্রতিসরণের ক্ষেত্রে কাঁচের দশনতারিকা ১.৫২। কাঁচের মধ্য দিয়ে অতিক্রমণ করার সময় বিভিন্ন বর্ণের আলোর প্রতিসরণের পরিমাণ একই নয়। বেগুনি বর্ণের আলোর জন্য প্রতিসরণের মান বেশি এবং লাল বর্ণের আলোর জন্য প্রতিসরণের মান কম। এর ফলে, বেগুনি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি এবং লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হয়। লাল আলোকে বেশি প্রতিসরণ করা হয় বলে কিছু ক্ষেত্রে রঙিন আলোর ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে। যেমন একটি প্রিজমের মধ্যে দিয়ে শ্বেত আলো প্রতিসরণ করলে সেটি বিভিন্ন রঙে বিভক্ত হয়। এই ঘটনাটিকে বলা হয় বর্ণালী বিচ্ছুরণ।

উপসংহার

এই আলোচনার শেষে, আমরা পৌঁছতে পারি যে কাঁচের মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিসরাঙ্কের মান আলোর বর্ণের উপর নির্ভর করে। দৃশ্যমান আলোর বর্ণালীর লাল প্রান্তের আলোর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে কম, যখন বেগুনি প্রান্তের আলোর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে বেশি। কাঁচের প্রতিসরাঙ্কের এই বৈচিত্র্যের কারণ হল আলোকের বিভিন্ন বর্ণের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পার্থক্য। লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এটি কাঁচে প্রতিসরিত হতে কম বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এর ফলে প্রতিসরাঙ্কের মান কম হয়। অন্যদিকে, বেগুনি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম হওয়ায় এটি কাঁচে প্রতিসরিত হতে বেশি বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এর ফলে প্রতিসরাঙ্কের মান বেশি হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *