আকাশের বিভিন্ন স্তরের এক্সপ্লোরেশন: আকাশ কয় ভাগে বিভক্ত?
আকাশ, আমাদের মাথার উপরে বিস্তৃত অসীম বিশালতা, রহস্য ও আশ্চর্যের একটি ভান্ডার। এটি আবহাওয়ার আদান-প্রদানের স্থান, তারা ও গ্রহের ঘর এবং আমাদের গ্যালাক্সির প্রবেশদ্বার। আকাশের স্তর বিভিন্ন ঘনত্ব, তাপমাত্রা এবং রচনা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রবন্ধে, আমি আকাশের বিভিন্ন স্তরগুলি অন্বেষণ করব, তাদের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করব এবং তারা আমাদের গ্রহ এবং এর বাসিন্দাদের কীভাবে প্রভাবিত করে তা পরীক্ষা করব। আপনি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য লাভ করবেন, প্রতিটি স্তরের বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব বুঝবেন এবং উপলব্ধ করবেন যে আমাদের আকাশ কতটা জটিল এবং প্রয়োজনীয় একটি ব্যবস্থা।
আকাশের স্তর
আমাদের মাথার উপরে বিস্তৃত বিশাল নীল বিস্তারকে আকাশ বলে। তবে এটি একটি সমজাতীয় সত্তা নয়, বরং স্তরবিন্যস্ত বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত। পৃথিবী থেকে দূরত্বের উপর নির্ভর করে আকাশকে সাধারণত পাঁচটি প্রধান স্তরে ভাগ করা হয়েছে:
- ট্রপোস্ফিয়ার: এটি আকাশের সবচেয়ে নিচের স্তর, যেখানে আমরা বাস করি। এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 12 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে আবহাওয়া ঘটনা যেমন মেঘ, বৃষ্টি এবং ঝড় ঘটে।
- স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার: ট্রপোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 50 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন স্তর রয়েছে, যা ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি থেকে আমাদের রক্ষা করে।
- মেসোস্ফিয়ার: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উপরে মেসোস্ফিয়ার রয়েছে, যা প্রায় 85 কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে সাথে হ্রাস পায়। মেসোস্ফিয়ারে উল্কাপিণ্ড জ্বলে পুড়ে যায়, যা আমরা উল্কা হিসেবে দেখতে পাই।
- থার্মোস্ফিয়ার: মেসোস্ফিয়ারের উপরে থার্মোস্ফিয়ার অবস্থিত, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 600 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে তাপমাত্রা অত্যন্ত উচ্চ, কারণ সৌর বিকিরণ বাতাসের অণুগুলিকে আয়নিত করে। থার্মোস্ফিয়ারে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে অরোরার প্রদর্শনী ঘটে।
- এক্সোস্ফিয়ার: থার্মোস্ফিয়ারের উপরে সর্বোচ্চ এবং পাতলা স্তর হল এক্সোস্ফিয়ার। এটি বায়ুমণ্ডলের সীমানা হিসাবে বিবেচিত হয় এবং আধুনিক সময়ে মহাকাশ হিসাবে পরিচিত।
ট্রপোস্ফিয়ার
হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নিচের স্তর। এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার (৬-৯ মাইল) উপরে পর্যন্ত বিস্তৃত। বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি এবং এখানেই আবহাওয়া ঘটে। এই স্তরে তাপমাত্রা সাধারণত উচ্চতার সাথে সাথে হ্রাস পায়। ে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প রয়েছে, যা মেঘ এবং বৃষ্টিপাতের জন্য দায়ী। এই স্তরে বাতাসের আন্দোলনও প্রায়ই ঘটে, যা আবহাওয়ার নিদর্শন নির্ধারণ করে। মানুষ এবং অন্যান্য জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শ্বাস নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে।
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
আমরা যখন আকাশের দিকে তাকাই, আমরা সাধারণত একটি বিশাল নীল বিস্তার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাই না। কিন্তু আকাশটি আসলে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত, এবং প্রতিটি স্তরের নিজস্ব অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই স্তরগুলির মধ্যে একটি হল ।
ট্রপোস্ফিয়ারের ঠিক উপরে রয়েছে, এবং এটি মাঝারিমণ্ডলের অংশ। এটি প্রায় 10 থেকে 50 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং এখানে তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হল ে ওজোন গ্যাসের একটি স্তর রয়েছে, যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিকে শোষণ করে তাপ উৎপন্ন করে।
বায়ু সাধারণত শান্ত এবং স্থিতিশীল থাকে, যা এটিকে বিমান এবং গুब्বারার জন্য একটি আদর্শ স্তর করে তোলে। এটি আবহাওয়ার বেলুন এবং রকেটের জন্যও ব্যবহৃত হয়। েও মেঘের একটি স্তর থাকে, যাকে স্ট্র্যাটোস্ফেরিক মেঘ বলা হয়। এই মেঘগুলি সাধারণত পানি বা বরফের কণা দ্বারা গঠিত হয়।
মেসোস্ফিয়ার
আকাশকে মোট পাঁচটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় স্তরটিকে বলা হয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ঠান্ডা স্তর। এটি ট্রপোস্ফিয়ার এবং মেসোপজের মধ্যবর্তী স্তর। ের নিচের সীমা ট্রপোপজে শুরু হয়, যা প্রায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। শীর্ষ সীমা মেসোপজে শেষ হয়, যা প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে সাথে হ্রাস পায়। ট্রপোপজে তাপমাত্রা প্রায় -৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে এবং মেসোপজে এটি প্রায় -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। ে বায়ুমণ্ডলীয় চাপও উচ্চতার সাথে সাথে হ্রাস পায়। ট্রপোপজে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ প্রায় ১০১৩ মিলিবার এবং মেসোপজে এটি প্রায় ০.০১ মিলিবার।
মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড সহ বিভিন্ন গ্যাসের ঘনত্ব কম থাকে। এই স্তরে অক্সিজেনের ঘনত্বও খুব কম, যা এটিকে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অনুপযুক্ত করে তোলে। ে মুক্ত র্যাডিক্যালগুলিও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, যা বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য রাসায়নিকের সাথে বিক্রিয়া করে।
আবহাওয়া এবং জলবায়ুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য স্তরের সাথে তাপ এবং আর্দ্রতা বিনিময়ের সাহায্য করে। ে মুক্ত র্যাডিক্যালগুলি ওজোন স্তরের ধ্বংসেও ভূমিকা রাখে।
থার্মোস্ফিয়ার
আকাশের পঞ্চম স্তরকে বলা হয়। এটি মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে এবং এক্সোস্ফিয়ারের নিচে অবস্থিত। ের সীমা সাধারণত ৯০ থেকে ৬০০ কিমি উচ্চতার মধ্যে বিস্তৃত। এই স্তরে তাপমাত্রা খুব বেশি হয়, যা ১,৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হল সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি, যা এই স্তরে বায়ুমণ্ডলের অণুগুলিকে আयनিত করে এবং উত্তেজিত করে। ে আয়নমণ্ডল অবস্থিত, যা রেডিও তরঙ্গ প্রতিফলিত করে এবং দূরবর্তী যোগাযোগকে সক্ষম করে।
এছাড়াও, ে আকাশীয় আলো দেখা যায়, যা বায়ুমণ্ডলের অণুগুলিকে আয়নিত করার ফলে সূর্যের তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রতিক্রিয়ায় ঘটে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ে বায়ুমণ্ডল খুব পাতলা, যার ফলে উপগ্রহ এবং মহাকাশযানগুলির ঘর্ষণ বাধা কম হয়। অবশেষে, ের সীমানায় অ্যান্টিম্যাটারের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, যা মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং বিবর্তনের অধ্যয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এক্সোস্ফিয়ার
এক্সোস্ফিয়ার হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তর। এটি মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে অবস্থিত এবং মহাকাশের শুরু হিসাবে বিবেচিত হয়। খুব পাতলা এবং বিরল, যেখানে গ্যাসের অণুগুলি একে অপরের সাথে খুব কমই সংঘর্ষ করে। এটি প্রায় 10,000 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এতে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং অক্সিজেনের মতো হালকা গ্যাস রয়েছে।ের তাপমাত্রা খুব বেশি হয়, তবে এটি সূর্যের আলো দ্বারা শোষিত হয় না। পরিবর্তে, এটি সূর্যের বিকিরণ দ্বারা আয়নিত হয়, যার ফলে মুক্ত ইলেকট্রন এবং আয়ন তৈরি হয়।ে মহাকাশযানগুলির সাথে সংঘর্ষের কারণে পৃথিবী থেকে উপগ্রহগুলির ড্র্যাগ তৈরি করে।