অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা কী? – উত্তর সহ ব্যাখ্যা
আজ আমি তোমাদের সকলকে অবস্থান্তর ধাতু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানাবো। অবস্থান্তর ধাতু কি, অবস্থান্তর ধাতু কী কী ভাগে ভাগ করা যায়, সন্নিবেশ সংখ্যা কি এবং কী কী, সেই সব কিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এই আর্টিকেল পড়ার পর তোমরা নিশ্চয়ই অবস্থান্তর ধাতু নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পাবে। তাই শুরু করা যাক!
অবস্থান্তর ধাতুর সংজ্ঞা
যে সব শব্দে কোনো কিছুর এক অবস্থা হতে অন্য অবস্থার পরিবর্তন বোঝায় তাদেরই অবস্থান্তর ধাতু বলা হয়। অবস্থান্তর শব্দের অর্থ হলো পরিবর্তন। তাই অবস্থান পরিবর্তন করানো যেসব ধাতু এগুলোকেই অবস্থান্তর ধাতু বলে। যেমন, ওঠা, দাঁড়ানো, চলতে শুরু করা, বসা, শুয়ে পড়া ইত্যাদি হচ্ছে অবস্থান্তর ধাতু।
অবস্থান্তর ধাতুর শ্রেণিবিভাগ
অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা হলো অবস্থান্তর ধাতুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যা। এটি একটি মৌলের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং একে Z দ্বারা প্রকাশ করা হয়। নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটনের সংখ্যা এবং নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরা ইলেকট্রন সংখ্যা সবসময় সমান হয়। এই কারণে, একটি মৌলের অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যাটি তার একটি পরমাণুর ইলেকট্রনের সংখ্যারও সমান। তাই, অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যাটি একটি মৌলের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সন্নিবেশ সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মৌলের ধাতব বৈশিষ্ট্য হ্রাস পায় এবং অধাতব বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধি পায়।
সন্নিবেশ সংখ্যা কী?
একটি অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা হল ধাতুর প্রতিটি অণুতে সহযোজিত লিগ্যান্ডের সংখ্যা৷ এটি রোমান সংখ্যার দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যেমন [Co(NH3)6]Cl3 এর জন্য 6৷ সন্নিবেশ সংখ্যা ধাতুর জটিল যৌগের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এটি যৌগের রঙ, চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য এবং প্রতিক্রিয়াশীলতা নির্ধারণ করে৷ একটি অবস্থান্তর ধাতুর জন্য সর্বাধিক সাধারণ সন্নিবেশ সংখ্যা 4 এবং 6৷ তবে, কিছু অবস্থান্তর ধাতুগুলির অস্বাভাবিক সন্নিবেশ সংখ্যা থাকতে পারে, যেমন [Ni(CN)4]2- এর জন্য 4৷
প্রধান অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা
অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা হলো কোনো অবস্থান্তর ধাতুর যোগবলের পরিমাপক। এটি নির্দেশ করে যে কতগুলো ইলেকট্রন একটি ধাতু অন্য ধাতুর কাছে দিতে বা গ্রহণ করতে পারে। অবস্থান্তর ধাতুগুলোর সন্নিবেশ সংখ্যা সাধারণত +1 থেকে +6 পর্যন্ত হয়ে থাকে। সন্নিবেশ সংখ্যা ধাতুর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, কপারের সন্নিবেশ সংখ্যা +1 বা +2, যার ফলে এটি তড়িৎ সঞ্চালন করতে পারে। আবার, অ্যালুমিনিয়ামের সন্নিবেশ সংখ্যা +3, যার ফলে এটি বেশি তড়িৎ সঞ্চালন করে এবং খাদ্য শিল্পে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা বিভিন্ন ধাতুর রাসায়নিক এবং ভৌত বৈশিষ্ট্য বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।
অপ্রধান অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা
হল ধাতুর পরে অপ্রধান হিসেবে কতটি অবস্থান্তর ধাতু যুক্ত হয়েছে বা সংযুক্ত হয়েছে তার সংখ্যা। বাক্যে একটি ধাতুর পরে সর্বাধিক দুটি অপ্রধান অবস্থান্তর ধাতু সংযুক্ত হতে পারে। এই দুটি অপ্রধান অবস্থান্তর ধাতুর মধ্যে প্রথমটিকে প্রথম অবস্থান্তর ধাতু এবং দ্বিতীয়টিকে দ্বিতীয় অবস্থান্তর ধাতু বলে। যেমন- পড়+আ+ল+(ও) = পড়ালো। এখানে পড় হলো ধাতু, আ হলো প্রথম অবস্থান্তর ধাতু এবং ল হলো দ্বিতীয় অবস্থান্তর ধাতু। তাই এই ধাতুর হলো দুই।
সন্নিবেশ সংখ্যার ব্যবহার
অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা কী?
অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা হল একটি নির্দিষ্ট ধাতুর পারমাণবিক কাঠামোতে ইলেকট্রন গ্রহণ বা দান করার ক্ষমতার একটি পরিমাপ। এটিকে সাধারণত একটি রোমান সংখ্যা দ্বারা নির্দেশ করা হয় এবং ধাতুর নামের পরে লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, লোহার একটি সন্নিবেশ সংখ্যা +২, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি দুটি ইলেকট্রন দান করতে পারে। সন্নিবেশ সংখ্যা ধাতুর রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন এর প্রতিক্রিয়াশীলতা, যৌগ গঠনের ক্ষমতা এবং জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ। বিভিন্ন অবস্থান্তর ধাতুর সন্নিবেশ সংখ্যা ভিন্ন হয়, যা তাদের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যে বৈচিত্র্যের জন্য দায়ী।